সোমবার, ২৭ মে ২০২৪, ১২:৫১ অপরাহ্ন

ডাকসুর দায়িত্বে বহাল থাকতে চান নূর-রাব্বানী, সাদ্দাম বলছেন ‘অনৈতিক’

ডাকসুর দায়িত্বে বহাল থাকতে চান নূর-রাব্বানী, সাদ্দাম বলছেন ‘অনৈতিক’

স্বদেশ ডেস্ক:

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্ধারিত এক বছর শেষে ৯০ দিনের বর্ধিত সময়ও পার করে আজ সোমবার শেষ হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) বর্তমান কমিটির মেয়াদ। তবে পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে চান ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূর ও জিএস গোলাম রাব্বানীসহ সংসদের একাংশ।

করোনাভাইরাস সঙ্কটে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এবং ডাকসুর খরচের অডিটসহ বিভিন্ন কাজ বাকি রয়ে গেছে বলে দায়িত্বে থাকতে চান তারা। আজ বিষয়টি নিয়ে ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন তারা।

অন্যদিকে ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেনসহ একাংশ মনে করেন, মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পদ ধরে রাখার চেষ্টা ‘অনৈতিক ও অগণতান্ত্রিক’। প্রায় তিন দশকের অচলাবস্থা কাটিয়ে গত বছরের ১১ মার্চ ডাকসুর নির্বাচন হয়। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সে হিসেবে এ বছর ২৩ মার্চ বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নতুন নির্বাচন না হওয়ায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৯০ দিন সময় বাড়ানো হয় বর্তমান কমিটির।

ডাকসুর গঠনতন্ত্রের ৬ এর (গ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘নির্বাচিত পদাধিকারীগণ ৩৬৫ দিনের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন না করা যায়, তাহলে অতিরিক্ত সময় হিসেবে অনুর্ধ্ব ৯০ দিন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। এর মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংসদ বাতিল হয়ে যাবে।’

ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় গত তিন মাস ধরে আমরা কোনো কাজ করতে পারিনি। এখন সবকিছুই স্থবির হয়ে আছে। আমরা চাই পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত আমাদের সুযোগ দেওয়া হোক এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ডাকসুর পরবর্তী নির্বাচন দিয়ে ধারাবাহিতা বজায় রাখা হোক।’

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘নিষ্ক্রিয়তার’ অভিযোগ তুলে নূর বলেন, ‘গত ১৪ জুন সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে আমি পরবর্তী ডাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম। উপাচার্য কোনো উত্তর দেননি। ডাকসুর নির্বাচন নিয়ে বরাবরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিষ্ক্রিয় থাকছে।’

ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে আমাদের অনেক কাজই অসম্পূর্ণ রয়েছে। এখনও আমাদের খরচের অডিট বাকি; মাত্র ছয় মাসের অডিট সম্পন্ন হয়েছে। ডাকসুর ফান্ডে ৯০ লাখ টাকা অব্যবহৃত রয়েছে। এই টাকাটা আমরা শিক্ষার্থীদের সহায়তায় খরচ করতে চাই।’

ডাকসুর পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য ‘দুর্যোগকালীন সহায়তা ফান্ড’ গঠনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা ফান্ড কালেকশন করে অনেক শিক্ষার্থীকে সহায়তা করেছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত আমাদের সুযোগ দেওয়া উচিত। এটা নিয়ে আমরা উপাচার্য স্যারের সাথে বসব।’

ভিপি-জিএস দায়িত্ব ধরে রাখতে চাইলেও তাদের সঙ্গে একমত নন ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদেরকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্বাচিত করেছে। এখন মেয়াদ শেষ হয়েছে, আমাদের উচিত দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া। গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে পদ ধরে রাখা অনৈতিক ও অগণতান্ত্রিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গণতন্ত্রের চর্চা করে, তারা অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানও বলছেন, গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘সবকিছু নিয়ম অনুযায়ী হবে এবং নিয়মের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।’

পরবর্তী ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উপাচার্যের একক সিদ্ধান্তে ডাকসু নির্বাচন হয় না। এটি একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। এতে অনেক স্টেকহোল্ডার জড়িত। তাদের সাথে কথা বলা প্রয়োজন।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877